সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সূচক “আঞ্চলিক ১০ দেশেরই পেছনে বাংলাদেশ”

সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারেজের সূচকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। জোড়াতালি দিয়ে যেসব কার্যক্রম চলছে তা মিলিয়েও তুলনামূলক চিত্রে অবস্থান ৫০ শতাংশের ওপরে উঠতে পারেনি। অন্যদিকে মানুষের চিকিৎসার জন্য নিজের পকেট থেকে সবচেয়ে বেশি যায় বাংলাদেশে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য অশনিসংকেত। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার বিষয়ক এক অবহিতকরণ কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরে এমন অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের উদ্যোগে রাজধানীর বিএমআরসি সভাকক্ষে গতকাল মঙ্গলবার এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় ইন্টারন্যাশনাল পার্লামেন্টিরিয়ান ইউনিয়নের হেলথ অ্যাডভাইজরি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবীবে মিল্লাত এই চিত্র তুলে ধরেন।

BMRC-1

ডা. হাবীবে মিল্লাত তাঁর উপস্থাপনায় জানান, ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারেজের সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। অথচ এই সূচকে ভুটান ৭২, নেপাল ৬২, শ্রীলঙ্কা ৬৮, ইন্দোনেশিয়া ৬১, মালদ্বীপ ৭২, দক্ষিণ কোরিয়া ৭৮ ও থাইল্যান্ড সর্বোচ্চ ৮৮ শতাংশ অবস্থানে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেবল বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে তিমুর। যদিও ওই তিমুর আবার সবার চেয়ে এগিয়ে আছে চিকিৎসায় রাষ্ট্রের ব্যয়ের দিক থেকে। অর্থাৎ তিমুরে চিকিৎসার পেছনে ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় হয় মাত্র ১০ শতাংশ। আর এ ক্ষেত্রে এই ১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশে ব্যক্তির পকেট থেকে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৬৭ শতাংশ। এ ছাড়া থাইল্যান্ডে ১২, মালদ্বীপে ১৬, ভুটানে ২০, নেপালে ৬০, ভারতে ৬৫, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৮ ও শ্রীলঙ্কায় ৩৮ শতাংশ ব্যয় হয় ব্যক্তির পকেট থেকে। অধ্যাপক হাবীবে মিল্লাত এমপি বলেন, বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল হলেও তা আরো কার্যকর করা সম্ভব কেবল কিছু সীমাবদ্ধতা কাটানো গেলেই। তাহলে এর মাধ্যমে দেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম আরো গতি পাবে।

অনুষ্ঠানে কমিনিউটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশে চালু হওয়া কমিউনিটি ক্লিনিক বিশ্বের কাছে রোল মডেল হয়ে উঠেছে। এ সেবাকে আরো বাস্তবমুখী, আধুনিক ও কার্যকরভাবে এগিয়ে নিতে হবে। কোথাও ত্রুটি-বিচ্যুতির খবর পেলেই সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানে আরো নতুন কিছু কাজ শুরু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কমিনিউটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদ। কর্মশালায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সার্বিক কার্যক্রম ও পরিচালনা বিধিবিধান সম্পর্কে অবহিত করেন কমিনিউটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. ইউনুস আলী প্রামাণিক।

সূত্র: কালের কন্ঠ, তারিখ: ১৯ জুন ২০১৯ লিংক: https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2019/06/19/781331

Bookmark the permalink.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *